1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালন

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২
  • ১৩০ বার পঠিত

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি :: কালিঘাট চা বাগানের চা শ্রমিক চম্পা তাঁতী বলেন, দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা পাই। শুনেছি বাগান মালিকরা আরো ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা দিবে বলে মালিকপক্ষ বলছে। আমার প্রশ্ন, দিনে ১৩৪ টাকায় কীভাবে আমার পরিবারকে নিয়ে জীবন চলবে? সবকিছুতে দাম বাড়তি, বাজারে গেলে মাছ মাংস কিনে খাইতে পারি না।

 

একই কথা জানালেন সুনিতা দেবী, কাজল মুন্ডাসহ অনেকে।

 

ভাড়াউড়া চা বাগানের নারী শ্রমিক সাধু হাজরা বলেন, ‘১২০ টাকা মজুরি পাই, এ দিয়ে আমাদের চলে না। আমরা অনেক কষ্ট করে জীবন কাটাই। সব কিছুর দাম বাড়ে, আমার মজুরি বাড়ে না।’

 

ভাড়াউড়া চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মো. নুর মিয়া বলেন, শ্রমিকদের এক দিনের মজুরি দিয়ে এক লিটার পেট্রোলও কেনা সম্ভব হবে না। শ্রমিকেরা কত কষ্টে থাকেন, তা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে কিছু হচ্ছে না।’

 

চা শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, চা শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে চা বাগানের মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদের করা চুক্তি অনুযায়ী চা শ্রমিকদের মজুরিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করা হয়। দুই বছর পরপর এ চুক্তি নবায়নের কথা। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদন করা হয়। ওই চুক্তিতে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে আর নতুন করে চুক্তি হয়নি। সম্প্রতি চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে চা-সংসদ মজুরি ১৪ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়। কিন্তু শ্রমিকনেতারা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। শ্রমিকদের মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবি জানান চা শ্রমিক নেতারা।

 

শ্রমিকদের বর্ধিত মজুরি নির্ধারণসহ অন্যান্য দাবিদাওয়া পূরণের বিষয়ে ১ আগস্ট চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশীয় চা-সংসদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে দাবি মেনে নিতে ৭ দিনের সময়সূচি বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানায় সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 

বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় নিয়ে চা-শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবি দীর্ঘ দিনের। মজুরি বৃদ্ধির এ দাবি না মানায় এবার তিন দিনের কর্মবিরতিতে গেছেন শ্রমিকরা।

 

শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগান, খাইছড়া চা বাগান ও ফুলছড়া চা বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রমিকেরা চা বাগানের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে দ্বিতীয় দিনের মতো দাঁড়িয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন। ভাড়াউড়া চা বাগানের শ্রমিকেরা কর্মবিরতিকালে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

 

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের বালিশিরা ভ্যালী সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে কত আন্দোলন, সংগ্রাম করে যাচ্ছি, চা বাগান মালিকপক্ষের টালবাহানা করেই যাচ্ছে। প্রতিটি শ্রমিকদের পরিবারের খরচ বেড়েছে। আমরা বারবার বাগানমালিকদের সঙ্গে বৈঠক করছি, কোনো সমাধানে আসছে না। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।’

 

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাদের মজুরি বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না আসলে আগামীকাল শুক্রবার অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরও যদিও মালিকপক্ষ কোন সিদ্ধান্তে না আসে পরবর্তীতে লাগাতার কর্মসূচীর আল্টিমেটাম দেন।

 

জানতে চাইলে বাংলাদেশীয় চা সংসদের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম বলেন, ‘আমাদের সামর্থ অনুযায়ী মজুরি ১৪ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। অধিকাংশই বাগানগুলো লোকসানে আছে। চায়ের বাজার তেমন ভালো না। আবার জ্বালানি তেলের দামও বেড়ে গেছে। চা শ্রমিকদের রেশনের আটা দেওয়া হয়। প্রতি কেজি গমের দাম ১৪ টাকা থেকে বেড়ে ২৮ টাকা হয়ে গেছে। এসব বিষয়ে ভাবতে হবে।’

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..